তুমি আছো তাই

(পর্ব-৩)


-হেই ইউ,,তুমি ভাবো কি নিজেকে?? মহারানী ভিক্টোরিয়া?? ঐশরীয়া বাচ্চান?? নাকি বাংলার ক্রাশ মেহজাবিন??

-ভারী আজব তো!! আমি প্রতিদিন ভার্সিটিতে এলেই আপনি কোথা থেকে উড়ে আসেন বলুন তো?? তাও আবার দুনিয়ার সব আজগুবি কথা।এই আপনার মাথায় কোন সাইডের নিউরনে প্রব্লেম আছে হু??

-এসব কি??

-কোনসব??🙄🙄

-দেখাচ্ছি যে দেখছো না?? কানা নাকি??

-ষাঁড়ের মতো না চেঁচিয়ে বুঝিয়ে বলতে পারেননা?? বাক প্রতিবন্ধী নাকি??

-এই মেয়ে খবরদার একদম আজেবাজে কথা বলবেনা।কালকে রাতে কি পাঠিয়েছ আমাকে??

-লে মশুর ডালের বড়া,,🙁আমি আবার আপনাকে কি পাঠালাম??

-এসব কি হু🤬

-ওহ মাই গড,,কি এসব?? জিএফের??😁

-চুপ,একদম চুপ।সেদিন একটা ধাক্কাতেই তোমার মনে বাংলা সিনেমার কাহিনি ঢুকে গেছে তাই না?? কি ভাষা এসব?? এরকম ভাষায় কেউ মেসেজ লেখে??আর তুমি আমার নাম্বার পেলে কোথায়?? কে দিয়েছে??

-wait wait wait,,আপনি বলতে চাইছেন যে মেসেজ গুলো আমি আপনাকে দিয়েছি??আপনার মাথার ঠিক কোন পয়েন্টে প্রব্লেম বলুন তো??

-"আপনার সাথে প্রথম ধাক্কার পর থেকেই আমার মনে ভালবাসার ঢেউ এসে ধাক্কা খাচ্ছে।সারাদিন শুধু আপনার কথা মনে পড়ে।আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করে।আপনি বারবার শুধু ঝগড়া করেন আমার সাথে তাই সরাসরি কিছু বলতে পারিনা।অনেক কষ্ট করে আপনার নাম্বারটা পেয়েছি।বিশ্বাস করুন উঠতে বসতে শুধু আপনার কথাই মনে পড়ে।আপনাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারিনা।তাই বলেই ফেলছি,,I love u...." এই মেসেজটা তুমি লেখনি??ছিঃ বাকিটাতো পড়তেও লজ্জা হচ্ছে আমার।

-আজব তো,,আমি আপনার মতো একটা হনুমানকে এসব লিখতে যাবো কেনো?? গতবারের বুলবুলে আমার মাথায় গাছ পড়েনি যে আপনার মতো একটা ষাঁড়কে ভালবাসতে যাবো।আর এই নাম্বারটা তো আমার না।

-আবার মিথ্যে😡নাম্বারটা তোমার আর মেসেজটাও তুমি লিখেছো। কথাটা পুরো ভার্সিটি ছড়ানোর আগেই কান ধরে সরি বলো আমাকে। আমি কাউকে কিছু বলবো না। নইলে এই মেসেজ ভার্সিটির সবাই দেখবে।

-কি বলছেন এসব??আপনি অযথা অন্য কারো দোষ আমার ঘাড়ে চাপাচ্চেন কেনো?? বলছি তো এসব আমার কাজ না।আপনাকে নিয়ে ভাবার বিন্দুমাত্র সময় নেই আমার।

(উফ মেয়েটা পেঁচাল বাড়িয়েই যাচ্ছে।সরি বলে দিলেই তো হয়। অপমানের শোধ নিতে চাচ্ছি তাও নিতে দিচ্ছেনা। নিলয় মনে মন্দ কথাগুলো আওড়াতে লাগলো।)

-দেখুন আপনি বাড়াবাড়ি করছেন। আমার বাবার একটা reputation আছে।আপনি without prove এ এমন কিছু করতে পারেন না।

-ওকে তুমি শুনবে না তো??এক্ষনি মেসেজটা ভার্সিটির সবার ফোনে ছড়িয়ে যাবে।

-plz don't do this..আমি এটা করিনি।কিরে অহন তুই কিছু বলনা।

-জি ভাইয়া মীরা এমন মেয়ে না।ও এমন কিছু করেনি।

-ও কেমন মেয়ে তা তো দেখিয়েই দিলাম।তুমি বলতে শুরু করলে শাস্তির ভাগ তোমাকেও নিতে হবে।

-কিন্তু ভাই........

-শুউউউউউউ🤫🤫যার কাজ তাকেই শেষ করতে দাও। নাও মীরা মেডাম,,শুরু করো।

-না,,যে কাজ আমি করিনি সেই কাজের জন্য আমি সরি বলবো না।

-ওকে তাহলে......

-না না না বলছি।সরি

নিল ছেড়ে দে না।শুধু শুধু.......তুই চুপ কর।যা করছি দেখনা চুপচাপ(নিলয় আর পালক নিজেদের মধ্যে কথা গুলো বলে নিলো)

-এভাবে বললে হবেনা। মাথা নিচু করে কান ধরে বলো।

-😢😢😢

-কি হলো বলো।

-সরি,আর কখনো এমন হবেনা।😥😥

-That's like a good girl..এই তোরা সবাই দেখেছিস তো?? সাক্ষী রইলি তো যে মিস. মীরা আমাকে সবার সামনে মাথা নিচু করে সরি বললো??

-নিলয় কাজটা ঠিক হয়নি। অযথা একটা মিথ্যে কথা বলে মেয়েটাকে এভাবে অপদস্থ কথা উচিত হয়নি। শুনেছি মেয়েটা খুব জেদি। দেখলিনা কেমন রক্ত চক্ষু নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে চলে গেলো?? নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পেয়েছে। আর অপমানটাও খুব বাড়াবাড়ি পর্যায়ের ছিলো।যদি কিছু করে??

-ধুর ও আবার কি করবে। পালক তুই ও না একটু বেশিই ভাবিস।আমার খিদে পেয়েছে। কিছু খাবো। তুই যদি চাস তো আসতে পারিস আমার সাথে।

-না তুই যা,আমার ভালো লাগছে না।

-ওকে

আমাকে সবার সামনে এভাবে অপমান করলো?? তাও বিনা অপরাধে?? ওনার সাথে দু' একবার ঝগড়া হয়েছে মানে তো এই নয় যে উনি আমাকে এভাবে সবার সামনে........বাবা এসব শুনলে ভীষণ কষ্ট পাবে। আমি তো কিছু বলতেও পারবো না। আমি এখন সবাইকে মুখ দেখাবো কিভাবে?? যে মীরার পিছনে এতো ছেলেরা ঘুরে সেই মীরা কিনা আজ অকারণেই একটা ছেলেকে সরি বললো?? আর আমি তো এতো বাজে মানসিকতার নইযে এমন আজেবাজে মেসেজ লিখবো। আচ্ছা আমাকে দেখতে কি তেমন মেয়ে মনে হয়😖(মীরা নিজের ঘরে কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কাঁদছিল)

-কীরে মা কি করছিস?? এখনো পড়া শেষ হয়নি?? আগে খেয়ে যা তারপর পড়িস।

বাবা ডাকছে!! আমার চোখ মুখ দেখে তো নিশ্চয়ই বাবা কিছু সন্দেহ করবে। না না বাবাকে কিছু বুঝতে দিলে চলবে না।

-আসছি বাবা।

-কিরে আজ তোর এতো দেড়ি কেনো?? অন্যদিন তো আমার দেরী হলে তুই আমাকে বকে সারা করিস। আজ তো তুই এ লেইট।

-হুম,একটা ম্যাথ করতে দেড়ি হলো।

-ওহ,,আচ্ছা নে শুরু কর। তোর চোখমুখ এমন লাগছে কেনো রে মা?? কিছু হয়েছে??

-না বাবা,,অনেকক্ষণ হলো না খেয়ে আছি তো তাই।আর একটু ঘুম ঘুমও পাচ্ছে।

-ঠিক আছে খেয়ে শুয়ে পড়িস। পরে না হয় পড়বি

-হুম,,শুরু করো তুমি।

আজকে একটা উচিত শিক্ষা দিয়েছি টিকটিকিটাকে। আর কখনো আমার সাথে ঝগড়া করার সাহস পাবেনা। আমাকে আর কারো সামনে অপমান করার স্পর্ধা দেখাবেনা। এখন আর এই মেসেজ গুলো রেখে লাভ নেই। ডিলিট করে দেই। তবে বস,নিজেই নিজেকে মেসেজ করায় একটা মজা আছে।😂কিন্তু কাজটা কি ঠিক করলাম?? পালক বারবার বাধা দিচ্ছিলো। আর আমারও শেষে একটু খারাপ লেগেছে। যাই হোক,,মেয়েটারও তেজ কম না। আজকের পর আমাকে আর কিছু বলার সাহস পাবেনা।

Post a Comment

Give your opinion, please!

নবীনতর পূর্বতন