তুমি আছো তাই
(পর্ব-8)
আজকে বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু মীরা বৃষ্টি একদমই পছন্দ করেনা। তবে আজ তার বৃষ্টি দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। উত্তরের জানালাটা খুলে উবু হয়ে বালিশে মুখ এলিয়ে সে বৃষ্টি দেখছে। নাহ আজ আর সে ভার্সিটিতে যাবেনা। বৃষ্টি না হলেও হয়তো যেতো না। যাবেই বা কি করে। ভার্সিটির সবাই যে ওকে দেখলেই হাসাহাসি করবে। কি এক অব্যক্ত অপমান বোধ কাজ করছে ওর ভিতর। সেদিনের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলো সেদিকে নজর নেই মীরার। ঘুম ভাঙলো ছোট খালামনির ফোন কলে।
ঘুম ঘুম চোখেই সে বললো-
-আসসালামুয়ালাইকুম।কে বলছেন??
-মীরা মা আমি।
-আমি কে??
-কিরে শাঁকচুন্নি,,এই অবেলায় ঘুমাচ্ছিস কেনো??
-এই কে রে,,নিশু নাকি??
-এতোক্ষণ আপনার শ্রদ্ধেয় খালামনি কথা বলছিলো। আমি সবে মাত্র এন্ট্রি নিলাম। তা এই অবেলায় ঘুমাচ্ছিস কেন??
-আরে একটু বৃষ্টি হচ্ছিলো তাই ঠাণ্ডা ওয়েদার পেয়ে ঘুমিয়ে গেছি। কেমন আছিস বল।
-এইতো ভালই। ভার্সিটি বন্ধ নাকি??
ভার্সিটির কথা বলাতেই মীরার মুখ ভারি হয়ে এলো। নিলয়ের কথা মনে পড়তেই রাগে তার শরীর নাড়া দিয়ে উঠলো। তাও নিশুকে বুঝতে না দিয়েই বললো
-না,,বন্ধ না। ওয়েদার খারাপ তাই যাইনি। আর কিছুদিন পর তো এক্সাম আছে তাই ভাবলাম বাসায় বসেই পড়ি। দরকারি নোটগুলো না হয় অহনের থেকে নিবো
-ও আচ্ছা। তো খালুজি কেমন আছে??
-হুম ভালই। তা এতদিন পর মনে পড়লো আমার কথা??
-এতদিন পর মনে পড়লো মানে?? whatsapp এ কয়টা মেসেজ জমা হয়েছে দেখ।
-Whatsapp এ মেসেজ দিয়েছিস??আমি তো বেশ ক'দিন হলো Whatsapp এ ঢুকিনি।
-হুম তবে?? আচ্ছা শুন,,তোকে তো আমাদের বাসায় আসতে হচ্ছে।
-কেন?? হঠাৎ করে তোদের বাসায় কেন??
-সেটা নাহয় তোর খালামনির কাছেই শুনে নে। আমার লজ্জা করছে🙈🙈
-ওরে আমার শেওড়া বুড়ি রে। কবে থেকে এতো লজ্জা গজালো তোর??
-মা,আমি তোর খালামনি। নিশু তো দৌড়ে ওর ঘরে চলে গেছে।
-কি হয়েছে বলো তো। অসময়ে ফোন। নিশু আবার লজ্জা পাচ্ছে। ব্যাপারটা কি??
-নিশুর বিয়ে ঠিক করেছি। আগামী ৮ তারিখ বিয়ে। মা তুই কালকেই চলে আয়। আমি এতো দিক সামলাতে পারছিনা। শপিং ও হয়নি এখনো।কখন যে কি করবো। বুঝে উঠতে পারছিনা।
-কিন্তু খালামনি আমার তো কিছুদিন বাদেই এক্সাম আছে। আর তুমি হঠাৎ করেই ওর বিয়ে ঠিক করলে কেন?? ছেলে কি করে??
-সেসব পরে বলবো। তুই কালকেই আসছিস ফাইনাল।
-কিন্তু খালা....
যাব্বাবাহ,,দিলো ফোনটা কেটে। যাই হোক নিশুর যখন বিয়ে তখন তো যেতে হবেই। এক্সামের আগেই বিয়ে মিটে যাবে।
এদিকে নিলয়ের মনে এখন অপরাধ বোধ কাজ করছে। মীরাকে সামান্য একটা কারণে এভাবে অপমান করায় ওর নিজেরও খারাপ লাগছে এখন।
-কি যে করি।আচ্ছা মিস. টিকটিকি আজ আসুক। ওকে খুব করে সরি বলে দিবো। কিন্তু বাইরে যে বৃষ্টি হচ্ছে আজ আসবে কিনা কে যানে।
ওদিন থেকে নিলিমা চেঁচিয়ে উঠলো
-ভাইয়া তোর ফোন বাজছে।
-এদিকে দিয়ে যা।
-আমি পারবো না।তুই নে এসে।
-আচ্ছা আমারও মনে থাকবে। আর বলিস ফুচকা আনতে।
নিলিমা নিলয়কে একটা ভেংচি কেটে ফোনটা দিয়ে গেলো।
-হ্যালো। আচ্ছা আচ্ছা।কবে?? হুম ঠিক আছে।
নিলয় ফোনটা কেটে নিলিমা কে ডাক দিলো।
-ওই নিলু বাবা কই রে??
-কোথায় আবার।নিজের ঘরেই আছে।
-ওহ আচ্ছা। আমার কিছু জামা-কাপড় গুছিয়ে দে তো। একটা কাজ পড়েছে।
-তোর আবার কি কাজ। সেই তো বন্ধুদের সাথে ইধার উধার ঘুরে বেড়াস।
-পাকনামি করিস না পেত্নি। যা বললাম কর।ফিরে আসার সময় তোর জন্য কিছু নিয়ে আসবো।
-আমার জন্য কিছু আনতে হবেনা। তুই ঠিকঠাক ভাবে ফিরে এলেই হয়।
-লক্ষ্মী বোন আমার।
ওরে বাবা রে মরে গেলাম গো। হাড্ডি বুঝি আর একটাও আস্তো নেই😖😖গেলো গেলো সব গেলো
-একিইইইইই তুমিইইইইইইইইইইই
-আপনিইইইইইইইই
Please like our facebook page- https://zee.gl/vX4bAb
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Give your opinion, please!