তুমি আছো তাই
(পর্ব-৬)
-এই থামো থামো।
-কিরে মীর কি হলো??(ঘাবড়ে গিয়ে)
-ওই দেখ নিশু একটা চকোলেট শপ।চলনা নামি।বেশি টাইম নিবো না।কয়েকটা চকোলেট নিয়েই চলে আসবো।
-মানে তুমি এই চকলেট এর জন্য এভাবে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামালে??(রেগে গিয়ে চেঁচিয়ে বললো নিলয়)তোমার কি কোনো কাণ্ডজ্ঞান নেই??এভাবে কেউ হঠাৎ চিৎকার করে??😡😡
-ধুর,,আপনার বকা নিয়ে আপনি থাকুন।নিশু এটা ধর আর ৫ মি. অপেক্ষা কর।নাকি যাবি আমার সাথে??
-নাহ যা তুই।তাড়াতাড়ি আসিস।
-ঠিক আছে।
(নিলয় মীরার কান্ড দেখে চুপ হয়ে বসে রইলো।এতো বড় একটা মেয়ে সামান্য চকলেট এর জন্য এমন করতে পারে?? লাইক সিরিয়াসলি??)
-কি বেপার নিলয় ভাইয়া,,চুপচাপ যে??
-ভাবছি।🤔
-কি??
-তোমার কাজিনটা কি আসলেই পাগল নাকি অন্য কিছু??হুট করে গাড়ি থামালো চকলেট খাবে বলে।ও কি শুধু সাইজেই বড় হয়েছে?? মনের মধ্যে তো এখনো বাচ্চামো।
-হা হা হা!!😂না ভাইয়া ও ঠিকি আছে।আসলে আমাদের মীর চকলেট খুব ভালবাসে।এই একটা জিনিস নিয়ে ওর কোনো কম্প্রোমাইজ নেই।হুটহাট করেই ওর চকলেট খেতে ইচ্ছে করে আর এমন কোনো না কোনো কান্ড বাধায়।আমরা অবশ্য ইনজয় করি ওর এসব পাগলামি।সবসময় তো রাগী মুড নিয়েই থাকে।শুধু চকলেট হাতের কাছে পেলেই এমন বাচ্চা স্বভাবের হয়ে যায়।
(নিশি কথাগুলো বলতে বলতেই নিলয় গাড়ির গ্লাস নামিয়ে মীরাকে দেখতে লাগলো।সত্যি কতোটা খুশি ও এই কয়েকটা চকলেটে।মনে হচ্ছে যেন ওর হাতে ও দুনিয়াটা পেয়ে গেছে।অলরেডি একটা চকলেট খুলে খেতে খেতে আসছে।নিলয় সেদিকেই তাকিয়ে আছে।কিভাবে একটা তেজী মেয়ে সামান্য চকলেট পেয়ে এতোটা শান্ত স্বভাবের হয়ে যায়।আজ যেন এক অন্য মীরাকে আবিষ্কার করলো নিলয়।
-তুই তো গেলিনা।ধর তোর জন্যও চকলেট এনেছি।
(মীরার কথায় নিলয়ের ভাবনায় ছেদ পড়লো)
-আমার জন্য আনতে গেলি কেন??
-যাতে পরে আমার কাছে চেয়ে বসতে না পারিস।হি হি হি😁😁
-শুধু কি দুই বোন খেলেই চলবে??আমি অপরাধী বান্দাটা কি কিছুই পাবো না??
-না,,আপনাকে দেওয়া হবে না।😒
-কেনো কেনো??🤨
-আমি চকলেট এর ভাগ কাউকে দেইনা।আর আপনাকে তো মোটেও দিবো না।আপনি একটা....
-আচ্ছা আচ্ছা হয়েছে।চুপচাপ চকলেট গুলো শেষ কর।ড্রাইভার দাদা চলো।
(মীরা আপন মনে চকলেট খাচ্ছিলো।বাচ্চাদের মতোই চকলেট দিয়ে মুখটা মেখে ফেলেছে।নিলয়ের চোখ সেদিকেই।সামনের গ্লাস দিয়ে বারবার দেখছিল মীরাকে।কি অসাধারণ লাগছে মীরাকে এই সময়।আচ্ছা নিলয় কি মীরার প্রেমে পড়ছে??হতেও পারে আবার নাও হতে পারে)
শপিংমলের সামনেই গাড়ি পার্ক করা হলো।নিশি আর মীরার পিছু পিছু নিলয়ও ভিতরে ঢুকলো।ওরা এটা ওটা বের করছে আর হাতে নিয়ে দেখছে।খুব বোরিং ফিল করছে নিলয়।
-মীর এদিকে আয় তো।দেখি এই শাড়িটায় কেমন লাগে তোকে।
-ও মাই গড,শাড়ি?? না না আমি পারবো না।আমি শাড়ি মেনেজ করতে পারি না।এটা রাখ তুই।
-আরে পড়েই দেখনা।এদিকে আয় তোর গায়ে ফেলে দেখি কেমন লাগে তোকে।
নিশি অরেঞ্জ কালারের মধ্যে গোল্ডেন জরির একটা শাড়ি মীরার গায়ে চড়িয়ে দিলো।
-বাহ,কি দারুণ লাগছে তোকে😃
নিলয়েরও চোখ পড়লো মীরার দিকে।অবাক চোখে হাজারো মুগ্ধতা এসে জমা হচ্ছে।কি অপরূপ লাগছে মেয়েটাকে।একটা মানুষ এতো সুন্দর হতে পারে??হঠাৎ করে রেগে যায়,হঠাৎ করে বাচ্চাদের মতো হয়ে যায়,আবার হঠাৎ করেই অপ্সরী হয়ে যায়।সেদিনের ঘটনার জন্য এবার অনেক বেশি অপরাধ বোধ করছে নিলয়।নাহ,,এটা ঠিক করেনি সে।মীরাকে যে করেই হোক সরি বলতেই হবে।
নিশি আর মীরা এটা ওটা অনেক কিছু কিনে নিয়েছে।শাড়ি,গয়না কিছুই বাদ দেয়নি।নিশি যে পার্লারে সাজবে সেইখানে গিয়ে কথাও বলে এলো।
আজ নিশির গায়ে হলুদ।পুরো বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।বাড়ির একটা কোণাও বাদ যায়নি রঙিন আলোকসজ্জা থেকে।নিশিকে স্টেজে বসানো হয়েছে।একে একে সবাই ওকে হলুদ মাখাচ্ছে।কিন্তু মীরা??মীরা কই??নিলয় বারবার মীরাকেই খুঁজছিলো।গেলো কোথায় মেয়েটা??সবাই আছে শুধু ও-ই নেই।
হঠাৎ করে নিলয় থমকে গেলো.........
Like Our Facebook Page- https://www.facebook.com/bdstorybazaar
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Give your opinion, please!