তুমি আছো তাই
(পর্ব-৭)
মীরা একটা হলুদ কালারের লাল পাড়ের শাড়ি পরেছে।চুল গুলো খোপা করেছে আর তাতে ফুল গাঁথা।হাতে মেচিং চুড়ি আর নাকে একটা ছোট্ট নোজ পিন।মুখে হালকা মেকাপ।সব মিলিয়ে অপূর্ব লাগছে মীরাকে।নিলয়ের তো চোখ সরছেই না।যেন কোনো এক রুপকথার হলদে পরী তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
-কিরে মীর,এতো দেড়ি করলি কেনো??হলুদের অনুষ্ঠান সেই কখন শুরু হয়ে গেছে।
মীরার খালামনির কথায় নিলয়ের ঘোর কাটলো।
-আর বলোনা খালামনি।নিশু জেদ ধরেছে গায়ে হলুদে আমাকে শাড়ি পড়তে হবে।তুমি তো জানো আমি জীবনে কখনো শাড়ি পড়িনি।সেই বিকেল থেকে ইউটিউবে শাড়ি পড়া শিখেছি।তাও দেখোনা কেমন হয়েছে।মনে হচ্ছে যেন খুলে যাবে।আমি সামলাতে পারছি না।
মীরার এই কথায় নিলয় ভালোভাবে মীরার শাড়ি পড়া পর্যবেক্ষণ করলো।দেখেই তার মাথা গরম হয়ে গেলো।কি করলো মেয়েটা😡
মীরার খালামনি চলে যেতেই নিলয় মীরার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।নিলয়কে দেখে মীরা সরে যেতে চাইলেই নিলয় মীরার হাত ধরে টেনে বাড়ির এক কোণায় নিয়ে গেলো।
-কি হলো,,আপনি আমার হাত ধরে এভাবে টানাটানি করছেন কেন??আর আমাকে এখানে কেন এনেছেন??আপনি খারাপ সেটা আমি জানি।কিন্তু এতোটাই যে খারাপ সেটা বুঝিনি।ছাড়ুন আমাকে।(মীরা কিছুটা ভয় পেয়ে আর রেগে গিয়ে কথাগুলো বলতে লাগলো।)
-শুউউউউউউউউউউউউ।একদম চুপ।
নিলয় মীরার পেটের কাছে হাত নিলো।
-কি বেপার,,আপনি আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন??ছাড়ুন বলছি।মীরা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।চোখ খুলতেই মীরা দেখতে পেলো নিলয় তার শাড়ি ঠিক করে দিয়েছে।পেটের কাছ থেকে শাড়ি সরে গেছিলো আর তা দেখেই নিলয় রেগে গেছিলো।
-কি ভেবেছো?? এডভান্টেজ নেওয়ার জন্য তোমাকে এখানে এনেছি?? গ্রো আপ মীরা,,নিলয় এতো খারাপ নয়।তার ঘরেও বোন আছে।আর আমি মেয়েদের যথেষ্ট সম্মান করি।হুম এখন তুমি বলিতেই পারো যে তাহলে সেদিন কেন এমন করলাম।আমি এটা মজা করে করেছিলাম তোমাকে ভয় পেতে দেখার জন্য।কিন্তু আমি বুঝিনি যে বেপারটা এতোটা খারাপ হয়ে যাবে।আমি সেদিন থেকেই তোমাকে সরি বলার জন্য ঘুরছি।কিন্তু তুমি আর ভার্সিটিতে যাওনি।কাকতালীয়ভাবে আমার বন্ধুর বোনের বিয়েতে তুমি,,তোমার খালাতো বোনের বিয়ে।এখানে এসেও সুযোগ খুজছিলাম সরি বলার।আমি সত্যি অনেক সরি।আমাকে ক্ষমা করে দিও।
কথাগুলো বলেই নিলয় সেখান থেকে চলে এলো। আর মীরা ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।সে যেন বেপারটা বুঝে উঠতেই পারছেনা।
তবে একটা বেপার সে বুঝতে পারলো।নিলয়কে সে যতটা খারাপ ভেবেছে ততটা খারাপ নিলয় নয়।নইলে এখানে দাঁড়িয়ে সে অনেক কিছুই করতে পারতো।তা না করে সে মীরাকে ঢেকে দিয়ে গেলো।
-নাহ,,ওনাকে বুঝা মুশকিল।কখন কি করে বুঝে উঠতে পারিনা।
কথাগুলো বলতে বলতেই মীরা স্টেজে এসে নিশুর পাশে বসলো এবং হলুদ মাখানোয় ব্যাস্ত হয়ে গেলো।নিলয় দূর থেকে মীরার হলুদ মাখানো দেখছিলো।কি অপরুপ সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে হলুদ মুখে।নিলয় মীরার কয়েকটা পিক ক্যামেরা বন্ধি করে নিলো।
পরেরদিন মীরা,,নিশু আর নিশুর কয়েকজন বান্ধবী পার্লারে গেলো নিশুকে সাজাতে।ব্রাইডের সাথে যেকোনো একজন সাজার পারমিশন আছে তাই নিশু মীরাকে সাজতে বললো।মীরা আপত্তি করলেও নিশির কথা শেষ অবধি ফেলতে পারলো না।
এদিকে অনেক্ষণ হয়ে গেছে মীরা নিশি ফিরছেনা।বারবার মীরার ফোনটাও বন্ধ আসছে।নিশি তো ফোনটা ঘরেই রেখে গেছে।মীরাকে বারবার ফোনে না পাওয়ায় সবাই চিন্তায় ডুবে গেছে।ওদিকে বরযাত্রী আসার সময় হয়ে গেছে।
হঠাৎ করে অনিকের নাম্বারে একটা কল এলো
Like Our Facebook Page- https://www.facebook.com/bdstorybazaar
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Give your opinion, please!