তুমি আছো তাই

(পর্ব-৮)



আননোন নাম্বার দেখে ভয়ে অনিকের গলা শুকিয়ে আসার মতো অবস্থা।তার হাত কাঁপতে শুরু করে।অনেক রকম চিন্তা মাথায় এসে জড়ো হয়।

-কি রে,,ফোনটা বাজছে তো।কে কল দিলো দেখ।

-নাম্বারটা চিনছি না রে নিল।

-আননোন নাকি??

-হুম।

-আচ্ছা তো ধরে দেখ কি বলে।

-ঠিক আছে।

-হুম কথা বলে দেখ।

-হ্যা হ্যা হ্যালো,,কে বলছেন??

-ও ভাইয়া আমি।

-মীর??

-হুম ভাইয়া।আমার ফোনের চার্জ শেষ।তাই মিতুর নাম্বার থেকে কল দিলাম।

-কি হয়েছে?? তোদের এতো দেড়ি কেন??সেই কখন থেকে সবাই অপেক্ষা করছি।চিন্তায় তো পাগল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে সবার।এতোক্ষণ কি করছিস??(অনিক কথাগুলো একদমে বলে গেলো)

-আরে আরে থামো ভাইয়া।আমাকেও তো বলতে দিবে।আসলে আমাদের কাজ তো অনেক আগেই শেষ।বেরিয়ে পড়েছি অনেক্ষণ আগেই।হাইওয়ে পার হওয়ার পর হঠাৎ গাড়িতে কি যেন প্রব্লেম দেখা দিলো।স্টার্ট নিচ্ছেনা।আশেপাশে গ্যারেজও দেখছিনা।একটা গাড়ি পাঠাও তাড়াতাড়ি।

-তো তুই এটা আগে কল দিয়ে জানাবি না??কতো কিছু মাথায় আসছিলো এতক্ষণ।আচ্ছা তোরা সেখানেই অপেক্ষা কর।গাড়ি পাঠাচ্ছি আমি।

-ঠিক আছে।

কিরে অনিক কে কল দিয়েছিলো?? মীর?? কি বললো?? কোনো বিপদে পড়েছে??ঠিক আছে তো ওরা??

-হ্যাঁ মা ওরা একদম ঠিক আছে।গাড়িতে যেন কি হয়েছে,,স্টার্ট নিচ্ছেনা।টেনশনের কিছু নেই।আমি দেখছি।

অনিকের কথা শুনে যেন নিলয়ের বুক থেকে অনেক বড় একটা পাথর নেমে গেলো।অনেক্ষণ ধরে মীরাকে নিয়ে চিন্তায় ছিলো সে।কিন্তু ভাববার বিষয় যে মীরাকে নিয়েই কেন এতো চিন্তা??বাকিরাও তো ছিলো ওর সাথে।নিলয়ের মনের কোনো এক কোণায় কি মীরা নামের নিম্নচাপের সৃষ্টি হলো??যা কিনা ভালবাসার ঝড় বয়ে আনছে ওর মনের উপকুলীর অঞ্চলে??

অনিক মীরাদের জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিলো।৩০ মি. এর মধ্যেই ওরা বাড়ি ফিরে এলো।এদিকে বরপক্ষও নিশিদের বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে।

মীরা,নিশির বান্ধবীরা,অনিকের বন্ধুরা আরও অনেক রিলেটিভেরা বরপক্ষের জন্য গেইটে গিয়ে দাঁড়ালো।সেখানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বর কে স্টেজে বসানো হলো।বিয়ের কাজ ভালো ভাবেই সম্পন্ন হলো।

সবাই ফটো শুটে ব্যস্ত।মীরা আজ সেই অরেঞ্জের মধ্যে গোল্ডেন জরির শাড়িটাই পরেছে।কানে মেচিং ঝুমকো।দুই হাত ভর্তি চুড়ি।চুলগুলো একপাশে এনে আর্টিফিশিয়াল ফুল গোঁজা।সব মিলিয়ে মীরাকে অসাধারণ লাগছে আজ।নিলয় সুযোগ বুঝেই শুধু মীরার পিক তুলছে।সেদিকে খেয়াল নেই মীরার।তবে এতো কিছুর পর নিলয় একটা বিষয়ে নিশ্চিত।সে তার রাগী টিকটিকিটার প্রেমের কুয়োয় পড়েছে।এবং সেটা ভালো ভাবেই।চাইলেও সেই কুয়ো থেকে উঠা তার আর সম্ভব না।তার মনে এখন শিমুল আর কৃষ্ঞচূড়ার ছড়াছড়িতে বসন্তের মেলা বসেছে।আর তাতে নানা রকমের সুর দিয়ে যাচ্ছে কোকিল।

নিশিকে বরের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হলো।খুব করে কেঁদেছিল মীরার খালামণি আর অনিক।মীরা তখন ভাবছিলো,,"আচ্ছা আমার বিয়ে হয়ে গেলেও কি বাবা এভাবেই কাঁদবে?? আমার বিয়ে হয়ে গেলে বাবাকে দেখবে কে??বাবা তো একদম একা হয়ে যাবে।🥺🥺"

কথাগুলো ভাবতেই মীরার চোখ ছলছল করে এলো।

নিশির সাথে মীরাও নিশির শশুড় বাড়ি গিয়েছিলো।সাথে ছিলো নিলয়ও।মীরার সাথে কথা বলার অনেক সুযোগ খুঁজেছিল সে।কিন্তু মীরা বারবার এদিকে সেদিকে চলে যায়।তাই সে আলাদা করে কথা বলতে পারেনি। নিশি দুদিন পর ফিরতি বাবার বাড়ি ফিরলো।

সেদিন সন্ধায় মীরা ছাদে গিয়ে অহনাকে কল দিলো। ইম্পরট্যান্ট নোট গুলো ওকে ইমেইল করার জন্য বলছিলো।

কথা শেষ করে ফোনটা হাতে নিয়ে দাঁড়াতেই হঠাৎ একটা আওয়াজে ভয় পেয়ে চেঁচিয়ে উঠলো মীরা।



Like Our Facebook Page- https://www.facebook.com/bdstorybazaar

Post a Comment

Give your opinion, please!

নবীনতর পূর্বতন