তুমি আছো তাই
(পর্ব-৯)
মীরা বুঝতে পারলো ততক্ষণে কেউ তার মুখ চেপে ধরেছে।পেছন থেকে মুখ চেপে ধরায় ও কাউকে দেখতে পেলো না।বারবার নিজের হাত দিয়ে ওই হাত দুটিকে খামচাচ্ছিলো।
-আরে ওরে,ওমাগো মা,ও বাবা নিয়ে গেলো নিয়ে গেলো। 😖😖
নিলয়ের চিৎকারে মীরা পিছনে ঘুরে দাঁড়াতেই অবাক।
-আ আ আপনি??এখানে এভাবে??আ আ আমি তো ভয় পেয়েছিলাম।
-তুমি মেয়ে না রাক্ষসী??এতো বড় নখ।
-কিইইইইইইইই 😡আমি রাক্ষসী????????? 😡😡😡😡নিজেই তো ভুতের মতো এসে চেপে ধরলেন আমাকে।ছাদে যেভাবে উঠলেন পায়ের আওয়াজ শুনে মনে হচ্ছিলো কোনো দৈত্য বা দানব এসেছে।
-আমি দৈত্য??😡😡
-হুম,বড়সর সাইজের দৈত্য😏
-তুমি নিজে কি হু??একটু আওয়াজে ওমাগো বাবাগো বলে চেঁচিয়ে উঠে আবার গলাবাজিও করে।কতো বড় নখ দিয়ে আমার মাংস গুলা নিয়ে নিলো 😭😭
-আমি জানতাম না যে আপনি এখানে এভাবে এসে হাজির হবেন।অপ্রত্যাশিত আগমনে একটু ভয় পাওয়া নরলাম😒
-ওরে আমার সাহসী নারী রে😏
-সাহসী ঠিক আছে।কিন্তু আপনার না।
-তো কার??
-আপাতত কারো না।
-ওহ আচ্ছা।
-হুম
-সেদিনের জন্য সরি।
-হুম আগেও বলেছেন।শুনেছি।
-শুধু শুনলেই হবে??
-তো??মাথায় তুলে নাচবো??
-ক্ষমা করা যায়না??🥺
-না😒
-কেন??বেশি অপমান করে ফেলেছি??আচ্ছা তুমিও আমাকে অনেক অপমান করে দিও।তাও ক্ষমা করো।
-হতে পারি জেদি আর রাগী। কিন্তু আপনার মতো বিবেক আর মানবিকতা শুণ্য মানুষ আমি না।আপনি নিজেও জানেন মেসেজ গুলো আমি করিনি।দরকার ছিলো না এমন করার।
-তোমার পায়ে পড়লে ক্ষমা করবে??
-সে কি,,দ্য গ্রেট নিলয় আমার পায়ে পড়বে??হাসি পাচ্ছে।
-পাক।তাও ক্ষমা করো।অপরাধের বোঝাঁটা খুব বেশি ভারী হয়ে গেছে।আর বইতে পারছিনা।
-তো??
-ক্ষমা করো।প্লিজ মীরা।আর কখনো এমন করবো না।
(নিলয়ের বারবার আবেদনে মীরা কিছুক্ষণ চুপ হয়ে ভাবছিলো যে কি করবে।সে সেদিন খুব বেশি অপমানিত হয়েছিলো ঠিকি,,কিন্তু নিলয় আজ তার চেয়েও বেশি অনুতপ্ত।)
-সত্যি বলছেন??
-একদম।
-পাক্কা??😒
-হুম পাক্কা।
-ঠিক আছে।
-ক্ষমা করেছো??
-হুম
-Thanks। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
-হুম
এরপর মীরা আর নিলয়ের অনেক্ষণ কথা হলো।মীরা পুরনো সব ভুলে নিলয়কে ক্ষমা করে দিয়েছে।নিলয় মীরার বন্ধু হতে চেয়েছে আর মীরা সেটায় সায় দিয়েছে।নিলয় এখন অনেক খুশি।তার ভালবাসার মানুষটা আজ তার খুব ভালো একজন বন্ধু।
বিয়ের সবকিছু মিটে যাওয়ার পর তারা দুজনেই বাড়ি ফিরে আসে।মীরা ভার্সিটি যাওয়া শুরু করে।কিছুদিনের মধ্যেই তার সেমিস্টার শুরু হয়।অহনার কাছ থেকে নেওয়া নোট গুলো খুব ভালো ভাবে ফলো করেছে সে।ভালো ভাবেই মিটেছে সব।
এদিকে প্রায়ই নিলয় মীরাকে এদিকে ওদিকে ঘুরতে নিয়ে যায় আর অনেক অনেক চকলেট কিনে দেয় ওকে।এই চকলেট এর জন্যই সে মীরাকে নিজের বন্ধু হিসেবে পেয়েছে।সেদিন রাতে সে চকলেট দিয়েই মীরাকে বন্ধুত্ব্বের কথা জানায়।নিলয়ের ডাক ফেরানোর সাধ্য থাকলেও চকলেট এর ডাক ফেরানোর সাধ্য মীরার নেই।
-মীরা আজকে নদীর ধারে যাবো।ফ্রি আছো??
-আজকে একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে।
-কেনো??
-বাবা একটু অসুস্থ।আমার দেড়ি হলে না খেয়েই বসে থাকবে।ওষুধটাও খাবেনা সময় মতো।
-খুব ভালবাসে তোমাকে তাই না??
-হুম খুব।
-আমিও তো খুব ভালবাসি (আসতে করে বললো)
-কিছু বললেন??
-না না,চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসি।
-না থাক।আমি একাই যেতে পারবো।আজ গেলাম।আল্লাহ হাফেজ।
-সাবধানে যেও।
মীরা একটু হেসে চলে গেলো। এই হাসিটাই নিলয়ের জন্য অনেক কিছু।
ওদের বন্ধুত্ব হয়েছে মানে এই না যে ওদের মাঝে আর ঝগড়া হয়না।এখনো হয়।আর অনেক বেশিই হয়।মীরা বেশি রেগে গেলেই নিলয়ের চুল টেনে দেয়।নিলয় সেটা ভালোই ইনজয় করে।
সেদিন মীরার বার্থডে ছিলো।নিলয় মীরাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য অনেক প্ল্যান করে।
রাত ১১:৪০ এর দিকে মীরা তার বেলকনিতে একটা খুশখুশ আওয়াজ পায়।কিসের আওয়াজ দেখার জন্য এগিয়ে যেতেই দেখে যে কেউ নেই,কিছু নেই।
তারপর.......
Like Our Facebook Page- https://www.facebook.com/bdstorybazaar
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Give your opinion, please!