তুমি আছো তাই

(পর্ব-১০)



মীরা কিছু দেখতে না পেয়ে এসে একটা বই হাতে নিয়ে শুয়ে পড়লো।
কিছুক্ষণ পর আবার সেই শব্দ।মীরা কিছুটা ভয় পেলো এবার।সময় তখন রাত ১২ টা ছুঁইছুঁই।
এদিকে মীরার বাবাও শুয়ে পড়েছে।তাই সে আর তার বাবাকে ডাকেনি।
মীরা আবার বেলকনির কাছে গেলো।

-নাহ,,এবারেও তো কিছু নেই।তাহলে কি আমার মনের ভুল??হুম হতেই পারে।

এটা ভেবে মীরা আবার রুমের দিকে ফিরে আসতেই দেয়ালে একটা চিড়কুট দেখতে পেলো।তাতে লেখা ছিলো...

"ডান দিকে ঘুরো।"

মীরা ভয়ে ভয়ে ডানদিকে ঘুরে দাঁড়ালো।সেখানে দেখতে পেলো আরো একটা চিড়কুট।তাতে লেখা...

"গুনে গুনে ৪ পা সামনে আসো"

মীরা ভয়ে আর বিস্ময়ে সামনে এগিয়ে গেলো।

নিলয় হঠাৎ মীরার পিছন দিক থেকে ঘুরে এসে বললো

-Happy Birthday Miraaaaaaaaa..

হঠাৎ করে আর চেঁচিয়ে নিলয় কথাটা বলায় মীরার কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা।ভীষণ ভয় পেয়ে গেলো সে।

-একিইইইই তুমিইইইই!!!এতো রাতে এখানেএএএএএএ??

-এতো কথা পরে হবে।দেখো ঘড়িতে ১২টা বেজে ১ মি.।তোমার জন্মদিন।😃

-আজকে আমার জন্মদিন সেটা তুমি কিভাবে জানলে??

-অহনার থেকে জেনেছি।তাই সারপ্রাইজ দিতে চলে এলাম😁

-ছাগলের মতো ভেটকানি বন্ধ করো।যথেষ্ট হাওয়া লাগিয়েছ দাঁতে।এতো রাতে এভাবে কেউ সারপ্রাইজ দেয়??ভয়ে আমার পরাণ পাখি আর একটু হলে উড়েই যাচ্ছিলো।

-এতো ভয় পেলে চলে??(নিলয় হাসতে হাসতে বললো)

-না,,দৌড়ায়।😏

-এখানে দাঁড় করিয়েই রাখবে নাকি একটু ভিতরেও যাবো??

-ভিতরে যাবে মানে??

(নিলয় ভ্রু কুঁচকে তাকালো)

-ঠিক আছে চলো।

-তোমার জন্য একটা জিনিস আছে।

-আমার জন্য?? আমার জন্য আবার কি??

নিলয় পিছন থেকে একটা গিফ্ট বের করে মীরার হাতে দিলো।

-কি আছে এটায়??

-খুলেই দেখো না।

-ওমা,শাড়ি!!আবার শাড়ি।😖

-হুম আবার শাড়ি।শাড়ির সাথে কি আছে সেটাও দেখো।

মীরা সবটা খুলে দেখলো ভিতরে খুব সুন্দর মেরুন কালারের শাড়ি আর সাথে মেচিং চুড়ি।তার পাশে অনেক গুলো চকলেট।

-কিন্তু আমি তো শাড়ি ওতো টা ভালো ভাবে পড়তে পারিনা।

-YouTube hai na mem..😉

নিলয় মীরার হাতে গিফ্টগুলো দিয়ে আবার বেলকনি দিয়ে নেমে চলে গেলো।

-অদ্ভুত।বাবা ছাড়া কখনো কেউ আর এভাবে আমার জন্মদিন মনে রাখেনি।আমাকে সারপ্রাইজড ও করেনি।এই প্রথম বাবার পরে কেউ আমার জন্মদিনটা এভাবে মনে করিয়ে দিলো আমাকে।আচ্ছা ও কি শুধু বন্ধুত্বের খাতিরেই এটা করেছে??নাকি অন্য কিছু??
নাহ অন্য কিছু হবেই বা কেনো?? বেশিই ভাবছি।

মীরার জন্মদিনটা খুব বড় করে পালন করলো তার বাবা।আর নিলয়ও নানারকম সারপ্রাইজে celebrate করেছে গোটা দিনটা।

কিছুদিন বাদেই মীরার রেজাল্ট বের হয়।ডিপার্টমেন্টে ফার্স্ট।সেদিন সব বন্ধুকে ট্রিট দিলো মীরা।নিলয় ও বাদ যায়নি।মীরার রেজাল্টে যেন নিলয়ই বেশি খুশি।

কিছুদিন পর...

-হ্যালো মীরা,,কোথায় তুই??

-কোথায় মানে??বাসায়।কেন??

-ওহ তাহলে তো ভালই হলো।

-কেন,,কি হয়েছে অহন??

-আমি একটা জায়গায় যাবো আর আমার সাথে তুইও যাবি।তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে ভার্সিটির রাস্তার মোড়ে আয়।আর শুন শাড়ি পরে আসবি।

-কোথায় যাবি??আর শাড়ি কেন??

-শুন প্রশ্ন কম কর।২০ মি. এ রেডি হয়ে আয়।

-ওই ফকিন্নি,,২০মি. এ শাড়ি পড়া যায়?? আর আমি একটু ঘুমাচ্ছিলাম।আরো ঘুমাবো।তুই যা।বাই বাই।

-ওই শাঁকচুন্নি ফোন কাটবিনা।আমি ৪০মি. পর তোর জন্য অপেক্ষা করবো।যদি না আসিস তো দেশের সব চকলেটে পোকা পড়বে।আমি অভিশাপ দিলাম😒

-ওই না না।আমার ভালবাসা না তুই?? এমন বলেনা।

-তোর আশেপাশে কেউ নেই তো।

-কেন??

-না মানি তুই আমাকে তোর ভালবাসা বলছিস তো তাই।কে কি ভাবে আবার।😂😂

-ওরে শয়তান।এতো বদ চিন্তা তোর??আচ্ছা ফোন রাখ।আমি আসছি।

-ওই ওই শোন।

-আবার কি খালা??

-রাখ তোর খালা।নতুন শাড়ি পড়বি।আগে পড়েছিস এমন শাড়ি বাদ।

-ওকে খালা।

-হুম বাছা রাখি এবার।তাড়াতাড়ি এসে উদ্ধার করো আমাকে।

মীরা ৪০মি. এর মাথায় রেডি হয়ে রাস্তার মোড়ে গিয়ে দাঁড়াল।পরনে নিলয়ের দেওয়া সেই শাড়ি।কারণ মীরার আর তেমন কোনো নতুন শাড়ি নেই।নিশুর বিয়েতে পড়ে ফেলেছে।এখন এটাই নতুন।সাথে নিলয়ের দেওয়া মেচিং চুড়ি।চুলগুলো খোলা আর হালকা একটু মেকাপ।মীরাকে অপ্সরা বানানোর জন্য এর চেয়ে বেশি কিছুর দরকার হয়না।

কিন্তু অহন কই??মীরা এসে অপেক্ষা করছে ১০মি. পেরিয়ে গেলো।অহন তো এলো না এখনো। এতোক্ষনে তো এসে যাওয়ার কথা।

-একটু সামনে গিয়ে দেখি।

মীরা অহনকে খোঁজার জন্য একটু সামনে পা বাড়ালো।

সামনে যা দেখলো তাতে মীরার চোখ ছানাবড়া....


Like Our Facebook Page- https://www.facebook.com/bdstorybazaar

Post a Comment

Give your opinion, please!

নবীনতর পূর্বতন